প্রতিনিধি 25 October 2025 , 3:34:01 প্রিন্ট সংস্করণ
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় আবারও দুর্নীতি, অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। সাম্প্রতিক এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে থানার এএসআই সোলাইমান বাদশা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
গত বুধবার (২২ অক্টোবর ২০২৫) রাতে সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজি ইউনিয়নের উলুইন গ্রামে ড্রাইভার বিল্লাল মিয়ার বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও, পুরো বাড়িটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ:
বিল্লাল মিয়া জানান,
> “আমি তখন নোয়াখালীতে গাড়ি চালানোর কাজে ছিলাম। হঠাৎ খবর পাই, আমার বাড়িতে স্থানীয় কিছু মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তারা নিয়মিত আমার বাড়ির পাশে মাদক সেবন করত। আমি প্রতিবাদ করায় প্রতিশোধ নিতে এই ঘটনা ঘটায়।”
তিনি আরও বলেন,
> “ঘটনার পর এএসআই সোলাইমান বাদশা ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি আমাকে থানায় ডেকে নেন, বলেন মামলা নেবেন—কিন্তু তার আগে ২৫ হাজার টাকা লাগবে। আমি টাকা দিই। পরে জানতে পারি, আসামিদের কাছ থেকেও তিনি প্রায় পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন, তাই আমার মামলা আর নেননি।”
বিল্লাল মিয়ার ক্ষোভ—
> “আমার বাড়ি পুড়িয়ে দিলো, আমি ন্যায়বিচার চাই। অথচ থানার পুলিশ উল্টো টাকা নিচ্ছে। আমি পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেব।”
ওসি’র রহস্যজনক নীরবতা
বিষয়টি জানতে সদর দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি সাংবাদিকদের ফোন কল কেটে দেন এবং পরে আর ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয় সাংবাদিক মহল প্রশ্ন তুলেছে—
> “যদি তিনি নিরপেক্ষ হন, তাহলে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন কেন? ওসি কি এএসআই সোলাইমানের দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত?”
দীর্ঘদিনের প্রভাবশালী এএসআই
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এএসআই সোলাইমান বাদশা প্রায় ৩৬ মাস ধরে সদর দক্ষিণ থানায় দায়িত্বে রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রের দাবি—এই দীর্ঘ সময়ে তার সঙ্গে এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ফলে থানার বিভিন্ন অভিযোগ “টাকা দিয়ে ম্যানেজ” হওয়া এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া
কুমিল্লার সুশীল সমাজ ও স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
তাদের ভাষায়,
> “সদর দক্ষিণ থানায় দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির সংস্কৃতি যদি এখনই বন্ধ না করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ পুলিশের ওপর আস্থা হারাবে।”
তারা জেলা পুলিশ সুপারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন—
“দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।”
এই প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্বে প্রকাশিত হবে—
এএসআই সোলাইমান বাদশার মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশ ও থানা অভ্যন্তরের গোপন চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটের বিস্তারিত তথ্য।